Saturday, December 14, 2013

এক কাপ চা

এক কাপ চা

 

ইব্রাহীম রাসেল


পৌষের প্রভাত। পুরো শহর তখনও ঘুমিয়ে। প্রতিদিনকার চেয়ে আজ কুয়াশার বাড়াবাড়িটা একটু বেশিই। কিন্ত আদিবাতো নিরুপায়। দীর্ঘ ছয়টি বছর পর ভালবাসার মানুষটি দেশে ফিরেছে। ভোর চারটায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছেছে তার প্রিয় মানুষটি।ছয় বছরের তৃষ্ণার্ত চোখ তার ব্যাকুল হয়ে আছে একপলক দেখার জন্য। কুয়াশার প্রতিকুলতা কি করে রুখবে তাকে। ড্রাইভার এতো সকালে না আসাটাই স্বাভাবিক। নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে।

২০০৬ সালের জুন মাসে চাকরীর সুবাদে অষ্ট্রেলিয়ায় যেতে হয় রেহানকে। এখন ২০১২র জুন মাস। পুরো ছয়টি বছর গুনে গুণে পার করেছে আদিবা। যদিও বর্তমান যুগে মানুষ পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুকনা কেন যোগাযোগটা এখন হাতের মুটোয়। আদিবা আর রেহানের মধ্যে সেই স্বাভাবিক যোগাযোগটুকু ছিল। কিন্ত যে হৃদয় ভালবাসে সে হৃদয়তো এতটুকুতে তুষ্ট নয়। প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ার ব্যকুলতা তার পরিমাপহীন। সেই পরিমাপহীন পথের পথিক আদিবা। রেহান যে বছর অষ্ট্রেলিয়ায় যায় সে বছরই জানুয়ারি মাসে তার সাথে পরিচয়। মাত্র ছয় মাস সুযোগ হয়েছিল তাদের নিয়মিত স্ব শরীরে যোগাযোগ করার। তারপরই প্রযুক্তির আশ্রয়। ওদের পরিচয়টা হয়েছিল অদ্ভুত এক ঘটনার মধ্য দিয়ে।


আদিবা তখন ফার্মগেটে ভার্সিটি ভর্তি কোচিং করতো। একদিন বিকেলে কোচিং শেষে কয়েকজন সহপাঠী বন্ধু সহ জিয়া উদ্যানে গেল। কিছুক্ষণ পায়চারির পর একটি খোলা জায়গায় ঘাসের ওপর গিয়ে বসলো। ওদের পাশেই আর একটি দলে কতগুলো ছেলে মিলে আড্ডা দিচ্ছিল। অদূরে কতগুলো পুচকে ছেলেরা ক্রিকেট খেলছিল। এরই মধ্যে ভাগ্নে হাজির,মামা চা লাগবো? আদা চা। লননা মামা! এক কাপ চা দেই। আদিবাদের মধ্যে একজন বলল,না ভাগ্নে চা লাগবেনা। ওদের পাশের দলের ছেলেগুলোর মধ্যে একজন ডেকে বলল,এই ভাইগ্না এদিকে আয় চা দিয়া যা। ভাইগ্না চা দিল তাদের। আদিবাও কি চিন্তা করে আবার ভাগ্নেকে ডাকল। সবাইকে চা দেয়ার কথা বলল। দু দলই চা খাচ্ছে আর নিজেদের মধ্যে নানা কথা নিয়ে হাসাহাসি করছে। হঠাৎ পুচকে ক্রিকেটারদের দিক থেকে একটি বল এসে প্রথমে আদিবার কাপে লেগে দ্বিতীয় ড্রপে গিয়ে পাশের ছেলেগুলোর মধ্যে একজনের কাপে গিয়ে পড়ল। আদিবার কাপটা ছিটকে গিয়ে একহাত দুরে পড়ে আর গরম চা গুলো পুরোটাই ওর বাম হাতে। আদিবার বন্ধুরা ছোটাছুটি করতে লাগলো ওর হাতেক কিছু একটা লাগাতে হবে।পাশের দলের ছেলেটির কাপে বলটির দ্বিতীয় ড্রপ হওয়ায় তেমন জোরে লাগেনি। ছেলেটি আদিবাদের দিকে এগিয়ে আসল। তাদের মধ্যে একজনকে প্রশ্ন করলো কি ভাই বেশি লেগেছে।উকি দিয়ে আদিবার হাতটা একবার দেখল। আদিবার বন্ধুদের আশ্বস্ত করে বলল দেখি ভাই কি করা যায়,বলেই দৌড় দিল উদ্যানের কোণে পুলিশ বক্সের দিকে। মিনিট খানিকের মধ্যে হাতে একটি স্যাভলন ক্রিম সহ দৌড়ে আসল।







কাউকে কিছু না বলেই ক্রিম বের করে আদিবার হাতে লাগাতে শুরু করল। ওর বন্ধুরা প্রথমে একটু আশ্চর্য হলেও পরে বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই নিল। আদিবার হাতের জ্বলানো ভাবটা একটু কমে আসলো। ছেলেটি যেভাবে ক্রিমটা লাগাচ্ছিল মনে হচ্ছিল সে যেন আদিবার কতদিনের চেনা। খুব আপন আপন ফিল করছিল সে। জানেনা কেন? এর মধ্যেই ছেলেটির দলের অন্য সবাই এসে জড়ো হল।এরপর পরিচয় পর্ব। ছেলেটি তার নাম বলল রেহান। আদিবারাও একে একে সবার নাম বলল। কে কি করছে বলল। রেহান বলল আমি মাস্টার্স শেষ করেছি এ বছরই। ও সবার ফোন নম্বার চাইল আদিবার বন্ধুরা কয়েকজন নম্বর দিল। এক পর্যায়ে আদিবার দিকে তাকিয়ে বলল আপনার নম্বরটা প্লিজ! আদিবা বলে দিল তার ফোন নম্বরটা। অন্য কোন মেয়ে হলে হয়তো নম্বরটা দিতে নিরুৎসাহিত হত। কিংবা আদিবাও হত। কিন্ত রেহানকে কেন জানি সে না বলতে পারেনি। পরিস্থিতিটাই এমন হল যে নিজের ভেতরে কোন অসম্মতির টের পায়নি সে। সন্ধ্যা হয়ে আসায় যে যার মত চলে আসে।


হঠাৎ একদিন রেহানের ফোন। কেমন আছেন? আপনার হাতের স্পটটা কি শুকিয়েছে? আদিবা স্বাভাবিক উত্তর দেয়,হ্যা ভাল। আপনি? ওদিক থেকে রেহান বলে আমি কিন্ত আরো একটা প্রশ্ন করেছিলাম। আদিবা একটু হেসে জ্বি হাতের স্পটটা শুকিয়েছে। রেহান বলে ওকে থ্যাংকস গড। তারপর বাই বলে রেখে দেয়। ব্যাস এইটুকুই ছিল প্রথম ফোনে কথা।
তারপর মাঝে মাঝেই নানা ইস্যু তৈরি করে আদিবাকে ফোন করতো রেহান। আদিবাও তার ইস্যুগুলোর ঘোরপ্যাচে আটকে যেত। জানেনা সেটা ইচ্ছে করে না অনিচ্ছায়। কথা চলতেই থাকতো। এইভাবেই দিনে দিনে তারা বাহ্যিক ইস্যু ছেড়ে কখন যেন জীবনের ইস্যুর দিকে ঝুকে পড়ে একটা। সময় আসে যখন রেহান ফোন না করলে আদিবার দিনটাই মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যেত। প্রতিদিন বিকেলে যত কাজই থাকুক একপলক দেখার জন্য রেহান ছুটে আসত ফার্মগেটে। আদিবাও কোচিং শেষে বের হত। দুজনে বজলু ভাইয়ের টং দোকানে এককাপ চা খেত। সেই ফাকেই আদিবাকে অপলক দেখা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাক্যালাপ।
আবার মাঝে মাঝে এমনও হত হঠাৎ উধাও হয়ে যেত রেহান। একদিন দুই দিন তবে তিনদিনের বেশি কখনো হতনা। আর এই সময় ফোনেও তেমন একটা কথা বলতো না। পরে যখন দেখা হত নিজের স্টাইলে একটা ডায়লগ মেরে দিত, দেখ,তৃষ্ণাই যদি না হয়,কী তৃপ্তি বলো জল পানে? আদিবা জানতো মানুষটা নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক ভাবে। আর সে জন্যই তার এই ছোটাছুটি। তাই এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে কখনো বাড়াবাড়ি কিছু হতনা।



`yR‡bi gv‡S †evSveywSUv wQj mwZ¨B Cl©vi|
†mw`b wQj ïµevi| 2006 Gi Ryb gv‡mi ïi“i w`‡K| mvKvj‡ejvB †inv‡bi †dvb- Avw`ev AvR‡K mvivw`b wKš‘ Zzwg Avgvi mv‡_ _vKQ| Avw`ev ejj- Kx e¨vcvi ejv †bB KIqv †bB nVvr Ggb wm×vš—? †inv‡bi fvl¨- †`L, AvR‡K ïµevi| Avgv‡`i Ad †W| A‡bKw`b †Kv_vI †ei nB bv| AvenvIqvUvI AbyK~‡j| myZivs wm×vš—Uv wK A‡hŠw³K? Avw`evi Avi wKQy ejvi †bB| †m Rv‡b bv‡Qvo ev›`v †invb| Zvi K_vi c¨vP KvwU‡q KLbI †m Kzwj‡q DV‡e bv| I‡K, AvmwQ e‡j †dvb †i‡L †`q| mKvj bUvi w`‡K `yRb wgwjZ nj †`v‡qj PZ¡‡i| †nu‡U †n‡uU P‡j Avmj XvKv wek¦we`¨vj‡qi Kjv fe‡bi w`‡K| ÔAvevi Avwme wd‡i avb wmuwo b`xi Zx‡i....Õ †inv‡bi †dv‡b wis †e‡R I‡V| †invb c‡KU †_‡K †dvbUv †ei K‡i, LvwbK Kcvj KzP‡K e‡j nVvr eo fvBqv! †dvb wiwmf K‡i| Icvk †_‡K eo fvBqv wK wK †hb ejj †invb ïay ï‡b hv‡”Q| †dvb ivLj| Avw`ev Rvb‡Z PvBj- Kx ejj fvBqv? †invb wKQyUv ¯—ä| kxZj K‡É ejj- AvMvgx ïµevi Avgvi d¬vBU| A‡bK w`b †_‡KB fvBqv Avgv‡K A‡óªwjqv cvVv‡bvi †Póv KiwQj| †Zvgv‡K ejv nqwb KviY G‡Zv ZvovZvwo †h me e¨e¯’v n‡q hv‡e AvwgI wbwðZ wQjvg bv| GKUz av°v †Lj Avwe`v| Avevi mvg‡j wb‡q ejj- I‡K, wVK Av‡Q| Zzwg †Zv Avi Ggwb Ggwb hv”Q bv, wb‡Ri K¨vwiqvi weìAvc Ki‡Z hv”Q, mgm¨v †Kv_vq? †invb ejj- wKš‘ Zzwg! Zzwg wK cvi‡e Avgvi Rb¨ `xN© mgq A‡c¶v Ki‡Z? Avw`ev ejj- Av‡i Avgv‡K wb‡q †febv| m‡e gvÎ fvwm©wU ÷z‡W›U| MÖvRy‡qkb †kl Ki‡Z Pvi eQi †Zv cvw”Q| Gi g‡a¨ ZzwgI GKUv fv‡jv my‡hvM cv”Q| GB KwVb K_v¸‡jvI Avw`evi mnR Dc¯’vcb †`‡L †invbI GKUz ¯^w¯—‡eva K‡iwQj †mw`b|     
Avw`ev P‡j Avm‡jv Gqvi‡cv‡U©, mKvj nIqvq iv¯—v duvKvB wQj| cy‡iv‡bv K_v fve‡Z fve‡Z GKUv †Nv‡ii g‡a¨B wQj GZ¶Y| nVvr †Pv‡L coj jvj Av‡jvq wegvb e›`‡ii bvgUv| Kzqvkv ZL‡bv Kv‡Uwb| gy‡Vv‡dv‡b Rvwb‡q w`j †invb‡K Avwg †cuЇQ †MwQ, evB‡i Mvwo wb‡q A‡c¶vq AvwQ| †invb g‡b g‡b Avkv KiwQj Avw`ev nqZ †fZ‡i G‡m Zv‡K wiwmf Ki‡e| GKUz wew¯§Z nj ZvI jv‡MR wb‡q †ewi‡q Avmj| Mvwoi `iRvUv Ly‡jB †i‡LwQj Avw`ev| †invb D‡V em‡ZB mvuB K‡i Uvb w`j| Avw`evi Ggb AvPi‡Y g‡b n‡jv wm‡bgvq wn‡iv‡K wb‡q wn‡ivBb cvjv‡”Q| wcQ‡b avIqv Ki‡Q wf‡jb k¦ïi| †invb GKUz AevK n‡qB- wK e¨vcvi Avw`ev! Ggb fv‡e Mvwo Pvjv”Q †Kb? Avw`ev ejj- †Kv‡bv K_v bq| Pzc K‡i my‡eva evj‡Ki g‡Zv e‡m _v‡Kv| wK e¨vcvi †`L‡Z _vK| Avw`ev GKUv‡b P‡j Avmj wRqv D`¨v‡b| †j‡Ki gvSvgvwS Ifvi cy‡ji Kv‡Q G‡m Kov †eªK| Mvwo cvK© K‡i †inv‡bi nvZ a‡i GK iKg †U‡b †U‡b wb‡q Avmj †mB HwZnvwmK ¯’v‡b †hLv‡b Zv‡`i cwiPq| Nv‡mi Ici `yRb e‡m coj| Kzqvkv †K‡U †M‡Q A‡bKUv| D`¨v‡bi cj­ev”Qvw`Z e„‡¶i dvuK w`‡q †mvbvjx †iv` G‡m coj Avw`evi gy‡L| `xN© QqwU eQi c‡i Avevi bZzb K‡i Avwe¯‹vi Kij †invb Zvi wcÖq gvbylUv‡K| Av‡Mi †P‡q Av‡iv †ewk dm©v n‡q‡Q Avw`ev| †fZ‡i †fZ‡i GKUv cyjK Abyfe n‡jv Zvi| Avw`ev ejj- †Kb GLv‡b G‡mwQ Rv‡bv? `xN© QqwU eQi cÖwZ gv‡m Aš—Z GKevi n‡jI GLv‡b G‡mwQ Ges wVK GB RvqMvq e‡m †Zvgv‡K wdj K‡iwQ| KviY GLvb †_‡KB †Zvgv‡K Avgvi cvIqv| †invb gy» nq| Av‡iv †ewk Uvb Abyfe K‡i Avw`evi Rb¨| mwZ¨B †m fyj K‡iwb| Rxeb Pjvi c‡_ Ggb GKUv gvby‡li †`Lv †m †c‡q‡Q _¨vsKm MW e‡j GKevi AvKv‡ki w`‡K ZvKvq| nVvr Zv‡`i Kv‡b †f‡m Av‡m- Pv Lv‡eb, Av`v Pv| Pv Lv‡eb....... †invb ZvwK‡q †`‡L †mB fv‡Mœ| hvi Pv‡qi m~Îa‡iB Zv‡`i cwiPq| †invb nvZ Bkvivq fv‡Mœ‡K Wv‡K| fv‡Mœ G‡m h_vixwZ- GK Kvc Pv †`e gvgv? Av`v Pv.......| †invb, Avw`ev `yR‡bB †n‡m I‡V| †invb e‡j- fvBMœv ZzB hvwe Avgv‡`i mv‡_? mviv Rxeb Pv evwb‡q LvIqvwe| fvBMœv †Kvb K_v e‡jbv|  Pv‡qi d¬v· nv‡Z wb‡q D‡ëv w`‡K nvuU‡Z ïi“ K‡i| Pv Lv‡eb? Av`v Pv ...........

†gvnv¤§`cyi, XvKv
15.11.2012  


No comments:

Post a Comment

ব্লগ অনুবাদক