Saturday, February 22, 2014

পরাবাস্তব ভ্রমন


পরাবাস্তব ভ্রমন

সৈয়দ রিয়াজুল হক

আমার বাস দুপুর ১২ টায়
এখন বাজছে ১২.২০ টাআমি লাগেজটা বক্সে দিয়ে বিরস মূখে সীটে বসে আছিসীট নম্বার বি-

টিকেটে আমার সীট ছিল বি-জানালার পাশে
            উঠে দেখি একজন ষন্ডামার্কা লোক ওই সীটে বসে আছেআমি বললাম এই সীটটা মনে হয় আমার তিনি চরম বিরক্তি সহকারে আমার দিকে তাকালেন
বললেন আপনার সীট কত? আমি বললাম বি ওয়ান এই দেখেন, বলে আমি আমার টিকেটটা ওনাকে দেখালামএবার তিনি আরো বিরক্ত হয়ে নিজের টিকেটটা বের করতে করতে বললেন বি ওয়ান আমার সীট আমাকে দিয়েছে এই দেখেন
আমি নিশ্চিত ছিলাম ওনার টিকেটে অন্য সীট নম্বার দেখব
                              কিন্ত আশ্চর্য হয়ে গেলাম দেখে যে ওনার টিকেট নাম্বারও বি ওয়ান ি একটু গলা চড়িয়ে ডাকলাম এই বাসের কন্টাকট কে?
একজন লোক সিড়ির নিচের ধাপ থেকে উপরে উঠে আসলো, বললো কি হয়েছেআমি বললাম বি ওয়ান সীট ডাবল হয়েছে বলে টিকিট দুইটাই তার হাতে দিলামলোকটা কাম সারেছে টাইপের কিছু একটা বলে টিকেট দুইটা নিয়ে কাউন্টারে চলে গেল
আমি আপাতত বি টু সীটটায় ওই বদখত চেহারার লোকটার পাশে বসে পড়লাম অবশেষে বাস যখন ছাড়লো ১২.২৫ বাজেঠিকঠাক মতো চললে কল্যানপুর পৌছাতে ছয় ঘন্টা মতো লাগবে অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬.২৫ মিনিট এ আমি ঢাকায় ল্যান্ড করতে পারবো ঘন্টাখনেক পরেই বাস লালন শাহ সেতুতে উঠে আসলো আমি চেয়ারটা ভেঙ্গে দিয়ে রিলাক্স করে চোখ বুজলাম
পাচ মিনিট পরেই কন্টাকটর টিকেট দুটো হাতে নিয়ে ফিরে এসেছিল আর বলেছিল ভাই ভুল করে ডাবল হয়ে গেছে, খেয়াল করে নাই একটা টিকেট বি-২ হবেআপনারা দুইজন একটু কম্প্রোমাইজ করে নিয়ে বসেন আমি কন্টাকটরের হাত থেকে টিকেট দুইটা নিয়ে  ভদ্রলোকেরটা বেছে তাকে দিয়ে দিলামভদ্রলোকও কোন কথা বলল নাকতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম মনে নেইআমি সাধারণত রাত্রে জার্নি করলেও ঘুমাইনাআর আজকে দিনে দুপুরে কি করে ঘুমিয়ে গেলাম ভেবে আশ্চর্য লাগলোঘুম ভাঙতেই আমি পকেট থেকে মোবাইলে সময় দেখে নিলাম তিনটা বাজেআর আধা ঘন্টার মধ্যেই ব্রেক দেবেতারপর আমি গ্রীন চিলিস থেকে নানরুটি আর লটপটি খাবআমি সিটটা সোজা করে নিয়ে আশে পাশের লন্ত দৃশ্যে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করলামদুই পাশেই সরিষার ক্ষেত হলুদে হলুদে মাখামখি অবস্থাএইরকম অনেক দিন পর দেখলামক্ষেতের মাঝে মাঝে বাবলা গাছরাস্তার দুই পাশে মেহগনি গাছ বুনোলতা গাছগুলি বেয়ে উপরে উঠে গেছেমাঝে মধ্যে ল্যান্টানা ঝোপ চোখে পছেদূরে কিছু বাড়িঘরগুলোর কাছাকাছি কলাগাছ একটা বাড়ির পাশে বাশ ঝাড়ও আছে দেখলামপাশে ছোট একটুকরো জমিতে একটা গরু বাধাসাদা ফকফকা একটা বাছুর গরুটার আশেপাশে লাফিয়ে বেড়াচ্ছেমহাসড়ক থেকে একটা কাচাপাকা রাস্তা বেরিয়ে গ্রামের ভিতর দিকে চলে গেছে রাস্তাটা কিছুদূর গিয়েই একটা ব্রীজব্রীজের কিনারে পা ঝুলিয়ে একটি ছেলে বড়শি ফেলে ফাৎনার দিকে তাকিয়ে আছে

পরের অংশ

No comments:

Post a Comment

ব্লগ অনুবাদক